সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া ঠিক হয়নি, বিচারিক ক্ষমতা দেওয়ার মানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসন ব্যর্থ হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেছেন, সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দেওয়া হয়েছে, ভালো কথা, তার মানে প্রশাসন ফেইল করছে। সেনাবাহিনীকে এ ক্ষমতা দেওয়ার মানে অন্যরা কাজ করছে না।
২০ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সকালে ঠাকুরগাঁও প্রেসক্লাবের হলরুমে জেলা বিএনপি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সেনাবাহিনীকে সারা দেশেই বিচারিক ক্ষমতা দেওয়ার সমালোচনা করে তিনি বলেন, “আমি মনে করি সেই সমস্ত এলাকায় দেওয়া দরকার, সেই সমস্ত এলাকা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে।”
“যে সমস্ত এলাকা শান্তিপূর্ণ আছে, যেখানে রাজনৈতিক নেতাকর্মীরাই সমস্ত বিষয়গুলোকে নিয়ন্ত্রণ করছেন- সেসব এলাকায় ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দিয়ে নতুন করে সমস্যা তৈরি করা সমীচীন হবে না বলে মনে করি।”
মির্জা ফখরুল বলেন, “আমি তাই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অনুরোধ করব- তারা বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করবেন এবং কখনই এমন কোনো ব্যবস্থা নেবেন না যা তাদের জন্য বুমেরাং হবে ও দেশের মানুষের জন্য বুমেরাং হবে।”
“সংস্কার আমরাও চাই, আমরা ৩১ দফা প্রস্তাব দিয়েছি দুই বছর আগে। আমরা বার বার বলেছি বিষয়গুলোকে ভালোভাবে দেখা উচিত হবে। জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য দীর্ঘ সংগ্রামের উল্লেখ করে তিনি বলেন, “গত ১৬-১৭ বছর ধরে আমরা ত্যাগ স্বীকার করছি, মার খাচ্ছি, জেলে যাচ্ছি; শুধুমাত্র এই ফ্যাসিবাদী সরকার সরিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য। “
ফখরুল আরও বলেন, “আমরা অত্যন্ত আশাবাদী হয়ে আছি- নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সব জঞ্জালকে দূর করে তারা দেশে এমন একটা পরিবেশ সৃষ্টি করবেন যে পরিবেশে সুস্থ উপায়ে সবার অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে। যার মধ্য দিয়ে জনগণের একটা পার্লামেন্ট তৈরি হবে। “
তিনি বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি রাজনৈতিক অবস্থায় ফিরে আসা, রাজনীতিবিদদের রাজনৈতিক কাজ করতে দেওয়া, এটাই সমস্যার একমাত্র সমাধান।”
স্পষ্টভাবে বিষয়গুলো তুলে ধরাকে ‘দায়িত্ব’ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমি জানি আমার কথাগুলো অনেকের মনঃপূত নাও হতে পারে, কিন্তু সত্য উচ্চারণ করা আমার দায়িত্ব। আপনার সেই কাজগুলো করেন যাতে একটা সুন্দর ভবিষ্যৎ, একটা সংঘাতহীন ভবিষ্যৎ, সন্ত্রাসমুক্ত ভবিষ্যৎ এবং মানুষের অধিকারযুক্ত ভবিষ্যৎ ফিরে পেতে পারি। স্বৈরাচার, ফ্যাসিস্ট পতনের আন্দোলনে ঠাকুরগাঁওয়ের শহীদদের পরিবার ও আহতদের সাথে সাক্ষাৎ ও সাহায্যকরণ’ শিরোনামের এই আয়োজনে নিহত চারজন ও আহত ৪১ জনের পরিবারকে ১৫ লক্ষ টাকা দিয়ে সহযোগিতা করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এ সময় ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, পৌর বিএনপির সভাপতি শরিফুল ইসলাম শরিফ, সদর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হামিদ, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মো. কায়েস’সহ জেলা, উপজেলা ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।