লেবুর অনেক গুণ রয়েছে। এর শরবত আদর্শ স্বাস্থ্যসম্মত পানীয়। লেবুর প্রধান উপকারিতা হলো ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ইত্যাদি তৈরি করে রোগ বালাই দূরীকরণ এবং শরীরের সার্বিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি। হজম শক্তি বাড়ানো এবং যকৃৎ পরিষ্কারের মাধ্যমে ওজন কমানোর ক্ষমতাও আছে।
যদিও এটি বেশি খাওয়া হয় অন্যান্য খাবারের সঙ্গে। বিশেষ করে বাঙালির ভাতের থালায় এক টুকরো লেবু থাকা চাই-ই চাই। আবার লেবুর শরবত, লেবু চা-ও বেশ জনপ্রিয়। লেবু তো খান, কিন্তু এর উপকারিতা জানেন কি? ভিটামিন সি-এর একটি সমৃদ্ধ উৎস হলো এই লেবু। তাই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে নিয়মিত লেবু খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
চলুন জেনে নেওয়া যাক লেবুর উপকারিতা সম্পর্কে-
১. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
লেবুতে একগুচ্ছ ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা আমাদের ইমিউন সিস্টেম অর্থাৎ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী রাখার জন্য বেশ কার্যকরী। এটি বিরক্তিকর সর্দি এবং ফ্লু প্রতিরোধ করতেও সাহায্য করে। তাই তো এ ধরনের সমস্যায় সব সময় লেবু খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
২. হজমে সাহায্য করে
দ্রবণীয় ফাইবার দিয়ে পরিপূর্ণ লেবু আমাদেরর অন্ত্রের জন্য বেশ সহায়ক। এটি অন্ত্রের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করতে এবং হজমের উন্নতি করতে সহায়তা করে। যে কারণে লেবু খেলে হজমশক্তি ভালো হয়। এতে মুক্তি পাওয়া যায় হজমের অনেক সমস্যা থেকে।
৩. ওজন কমায়
লেবুর পানিতে মধু দিয়ে চুমুক দিচ্ছেন? দেখা যাচ্ছে, এটি কেবল খেতেই সুস্বাদু নয়। বরং লেবুতে থাকা ফাইবার আপনাকে দীর্ঘ সময়ের জন্য পূর্ণ বোধ করতে সহায়তা করে। যার ফলে বার বার নাস্তা করার সম্ভাবনা কমে, যা ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
৪. পানি ধারণ কমায়
লেবু প্রাকৃতিক মূত্রবর্ধক। এর মানে এটি আপনার শরীরকে অতিরিক্ত পানি থেকে মুক্তি দিতে এবং পিএইচ মাত্রার ভারসাম্য ঠিক রাখতে সাহায্য করে। এর যার ফলে শরীরে ফোলার সমস্যা কমে যায়। তাই এ ধরনের সমস্যা থেকে দূরে থাকতে চাইলে নিয়মিত লেবু খেতে হবে।
৫. ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে
লেবুর অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টি-এজিং বৈশিষ্ট্যে আপনার ত্বককে অতিরিক্ত উজ্জ্বলতা দিতে পারে। এটি শরীরের ফ্রি র্যাডিকেল কমাতে সাহায্য করে, প্রদাহ মোকাবিলা করে। এর ফলে পরিষ্কার ও উজ্জ্বল রঙ পাওয়া সম্ভব হয়।
লেবুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি ও লৌহ । যা ঠাণ্ডাজ্বর জাতীয় রোগের জন্য উপকারী। আরো আছে পটাসিয়াম, যা মস্তিষ্ক এবং স্নায়ুকে সক্রিয় রাখে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
লেবুর খোসা কালো দাগ, বলি রেখা, বার্ধক্যের ছাপ দূর করতে সাহায্য করে। ত্বক ভালো রাখতে খাবার পাশাপাশি সরাসরি ত্বকে লাগাতে পারেন।
লেবুতে প্রচুর পরিমাণের ভিটামিন সি আছে । আঁশজাতীয় পদার্থ ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে রাখে। ফলে ওজন কমে।
দেহে প্রতিদিন ‘ভিটামিন সি’র চাহিদার ৩০ শতাংশ পূরণ করতে পারে লেবু।
শরীরে মূত্রের পরিমাণ বৃদ্ধি করে এবং খুব দ্রুত ক্ষতিকর ও বিষাক্ত পদার্থ শরীর থেকে বের হয়ে যায়। মূত্রনালির স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়ক।
প্রাণচাঞ্চল্য বাড়িয়ে দিতেও লেবুর জুড়ি নেই। খাবার থেকে শক্তি শোষণের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। এর গন্ধে মন ফুরফুরে হয়ে যাবে। দুশ্চিন্তা এবং বিষণ্ণতা দূর করে।
রাতে ঘুমানোর সময় যে পানি খরচ হয় তা পূরণ হবে সকালে এক গ্লাস লেবু পানি পানে।
ত্বকের দাগ দূর করে লেবুতে থাকা বিভিন্ন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। স্বাস্থ্যজ্জ্বল ত্বকের জন্য খুব দরকার ভিটামিন সি। ব্রণ বা অ্যাকনি সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া দূর করে।
লেবুর রস নিঃশ্বাসে সতেজতা আনে। গরম পানির সঙ্গে লেবুর রস পানে দাঁতের ব্যথা এবং জিঞ্জিভাইটিসের উপশম হয়। এটা পানের পরপরই দাঁত ব্রাশ করবেন না, কারণ সাইট্রিক এসিড দাঁতের এনামেল ক্ষয় করে ফেলে। আগে দাঁত ব্রাশ করে তারপর পান করা ভালো।