টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর-তারাকান্দি আঞ্চলিক মহাসড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নতিকরণসহ সংস্কার কাজে ৩০১ কোটি টাকা ব্যয়ে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। ফলে সামান্য বৃষ্টির পানিতে সড়কটির বিভিন স্থানে ধসে গিয়ে ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে যানবাহন চলাচলে বাড়ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি।
আঞ্চলিক মহাসড়কে সরেজমিনে দেখা গেছে, ভূঞাপুর-তারাকান্দি আঞ্চলিক মহাসড়কের পৌর এলাকার বাহাদীপুর, টেপিবাড়ি, কুঠিবয়ড়া, নলীনসহ কয়েকটি স্থানে বৃষ্টির পানিতে সড়ক ধসে গেছে। ফলে সেখানে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। তবে ধসে যাওয়া কিছু স্থানে সওজ বিভাগ থেকে বালুর বস্তা দিয়ে মেরামত করার চেষ্টা করছে।
টাঙ্গাইল জেলা সড়ক ও জনপদ বিভাগ (সওজ) সূত্রে জানা গেছে, ২৮ কিলোমিটারের ভূঞাপুর-তারাকান্দি মহাসড়ক (জেড- ৪৮০১) মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতিকরণের জন্য ২০১৯ সালে ৩০৭ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ২০২১ সালে এটির কাজ শেষ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। কাজটি পায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান রানা বিল্ডার্স। এরপর নির্ধারিত সময়ে কাজটি শেষ করতে না পারায় ২ বার সময় বৃদ্ধি করে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বর্ধিত করে কর্তৃপক্ষ। কাজের মধ্যে ভূমি অধিগ্রহণ, পেভমেন্ট নির্মাণ, আরসিসি বক্স কালভার্ট নির্মাণ, বাস-বে ও ট্রাক-বে নির্মাণ, সসার ড্রেন নির্মাণসহ বেশ কয়েকটি কাজ কথা রয়েছে।
এছাড়া প্রকল্প এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডেও স্লুইজ গেট রক্ষায় কালভার্টের ডিজাইন পরিবর্তন ও এক্সেল লোড কন্ট্রোল স্টেশন নির্মাণের স্থান পরিবর্তন ইত্যাদির কারণে প্রকল্পটি সংশোধন করা হয়। এতে প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি না পেলেও প্রাক্কলিত ব্যয় কমে যায় ৫.৭ কোটি টাকা। এতে প্রকল্পের ব্যয় দাঁড়ায় ৩০১ কোটি টাকায়।
জানা গেছে, সড়ক ভূঞাপুর-তারাকান্দি মহাসড়ক (জেড- ৪৮০১) মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতিকরণের কাজ শেষ হাওয়ার আগে থেকেই বৃষ্টির পানিতে বিভিন্ন জায়গায় ধসে পড়েছিল। সম্প্রতি নতুন করে আবারও ভারী বৃষ্টির কারণে সড়কটির বিভিন্নস্থানে ধসে পড়ে। সড়ক ধ্স ও গর্ত সংস্কারে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কয়েকবার চিঠি দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা পালন করছে না।
কুঠিবয়ড়া গ্রামের মোবারক জানান, নিম্নমানের কাজ করায় বৃষ্টির পানিতে বিভিন্ন স্থানে সড়ক ধসে পড়েছে। অনেকস্থানে গর্তে স্থানীয়রা লাল নিশানা টাঙিয়ে দিয়েছিল। কিছু এলাকায় বালুর বস্তা দিয়ে গর্ত পূরণ করা হয়েছে।
স্থানীয় পরিবহন চালকরা জানান, সড়কের পাশে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে সেটা রাতে বোঝা যায় না। এতে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয়। এতে বিভিন্ন সময় দুর্ঘটনা ঘটছে। সড়কের কাজ করার সময়ও বৃষ্টিতে ধসে পড়েছে। জোড়াতালি দেওয়া হয়েছে। যে মানের সড়ক করা হয়েছে তাতে বেশিদিন স্থায়ী হবে না।
সাব ঠিকাদার জনি জানান, বৃষ্টির কারণে এমন হয়েছে। অনেক জায়গাতে গর্ত পুরণ করা হয়েছে। মুল ঠিকাদারকেও সংস্কার করতে চিঠি দেওয়া হয়েছে। সপ্তাহ খানেকের মধ্যে কাজ শেষ করা হবে। টাঙ্গাইল জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সিনথিয়া আজমেরির বক্তব্য জানতে ফোন দেওয়া হলেও রিসিভ করেননি।