টাঙ্গাইলের নাগরপুরে দৈনিক বাংলা৭১ পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি মো. সিরাজ আল মাসুদের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় দুই জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছেন- নাগরপুর উপজেলার সহবতপুর ইউনিয়নের ইরতা গ্রামের মৃত জাকির হোসেনের ছেলে রনকুর রহমান রনক (১৯) ও একই উপজেলার বাবনাপাড়া গ্রামের কিরন মিয়ার ছেলে ইয়াসিন আরাফাত (২০)।
মামলা সূত্রে জানা যায়, সাংবাদিক মো. সিরাজ আল মাসুদের নাগরপুরের বাড়িতে তার মা একা বসবাস করেন। গত বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) উপজেলার ভাড়রা বাজারে জমি সংক্রান্ত সালিশি বৈঠক শেষে তার মা ও ছোট ভাই সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে নাগরপুরস্থ বাসায় ফিরে যান। বাড়িতে ফিরেই ওৎ পেতে থাকা একদল সশস্ত্র ডাকাতের হামলার শিকার হন। এসময় তার ছোট ভাই জাহিদ হাসানকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের চাবি ও মোবাইল ফোন নেবার চেষ্টা করে। এ সময় তিনি বাঁধা দিলে ছুরির বাট দিয়ে ডাকাতরা তার বাম চোখে আঘাত করে। এ সময় মা তার ছেলে জাহিদকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে ডাকাতরা তার মা জাহানারা আক্তারকে মারধর করে এবং গলায় থাকা স্বর্ণের চেইন ছিঁড়ে নেয়। পরে মায়ের চিৎকারে লোকসমাগমের ভয়ে ডাকাতরা পালিয়ে যায়।
এ বিষয়ে আহত জাহিদ হাসান জানান, তার মা গেইট খুলে বাসায় প্রবেশ করে এবং তিনি বাসার সামনে বাইক থামিয়ে রাখেন। তখনই আগে থেকে ওৎপেতে থাকা ডাকাতরা পেছন থেকে জাহিদের উপর ঝাপিয়ে পড়ে। ছুরির মুখে জিম্মি করে তার কাছে থাকা দুই লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয়। তিনি বাঁধা দিতে গেলে বাঁশের লাঠি দিয়ে তার মাথায় বরাবর আঘাত করে। তিনি বাম হাত দিয়ে প্রতিহত করেন। এ সময় তিনি চিৎকার করলে ডাকাতদের একজন দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তার চোখে আঘাত করে। তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। ওই সময় তার মা জাহানারা আক্তার দৌঁড়ে এসে তাকে ঝাপটে ধরে বাঁচানোর চেষ্টা করেন ও চিৎকার করতে থাকেন।
আহত মা জাহানারা আক্তার জানান, বাসার চাবি তার কাছে থাকায় মোটরসাইকেল থেকে নেমে তিনি গেইট খুলে ভেতরে প্রবেশ করেন। এ সময় হঠাৎ তিনি ছেলের চিৎকারের আওয়াজ পান। উঠানের দিকে গিয়ে দেখতে পান ১০-১২ জন ডাকাত তার ছেলেকে মারধর করছে। এসময় তার ছেলে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।
তিনি ছেলেকে বাঁচাতে ঝাপটে ধরে চিৎকার করতে থাকেন। ডাকাতরা তাকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে তার গলার স্বর্ণের চেইনটি এক ঝটকায় ছিঁড়ে নিয়ে যায়। মা-ছেলের চিৎকারে ডাকাতরা পালিয়ে যায়। পরে শনিবার (১ মার্চ) তিনি এক জনের নামোল্লেখ সহ অজ্ঞাত ১০-১২জনকে অভিযুক্ত করে নাগরপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।
এ বিষয়ে নাগরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম জানান, তিনি খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আহতকে দেখতে যান। ওই ঘটনায় দুই জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান চালানো হচ্ছে।