টাঙ্গাইলে আওয়ামী লীগের অফিস, নেতাদের বাড়িতে ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা সংবাদ সম্মেলন করে একে অপরকে দোষারোপ করেছেন। এক পক্ষের দাবি তারা আওয়ামী লীগের জেলা কার্যালয় ভাঙচুরের পক্ষে ছিলেন কিন্তু নেতাদের বাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের বিষয়ে অবগত নন। অপরপক্ষ বলছেন তারাই (অপরপক্ষ), তারা নেতাদের বাড়ি ভাঙচুরের জন্য ভেকু-বুলডোজার ভাড়া করে একটি তালিকা ধরিয়ে দেয়। এখন তারা অস্বীকার করছেন।
এ বিষয়ে শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টা ও রবিবার (৯ ফেব্রয়ারী) সকাল ১১টায় টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের মিলনায়তেন জেলার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে দুটি গ্রুপের সমন্বয়করা পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন করেন।
শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮ টায় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আল আমিন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাদের বাড়িতে ভাংচুর, লুটপাটের ঘটনায় আমরা জড়িত নই। কিছু তথাকথিত সমন্বয়ক এ কাজ করতে পারে। যারা এ সব কাজ করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রশাসনের সাথে কথা হয়েছে ভিডিও ফুটেজ দেখে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, সারাদেশে আজ থেকে অপারেশন ডেভিল হান্ট শুরু হবে। আমরা এ অভিযানের সফলতা কামনা করছি। এসময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সমন্বয়ক মনিরুল ইসলাম, নবাব আলী, আল আমিন সিয়াম ও আহমেদ শেরশাহ ‘সহ অন্যান্য সমস্বয়করা উপস্থিত ছিলেন।
রবিবার (৯ ফেব্রয়ারী) সকাল ১১টায় টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের মিলনায়তেন জেলার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অপর গ্রুপের সমন্বয়কদের পক্ষে তথাকথিত সমন্বয়ক বলায় পাল্টা সংবাদ সম্মেলনে মারইয়াম মুকাদ্দাস মিষ্টি বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী ছিলাম। আমার বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা তারপরও আমি কোটা পদ্ধতির বিরোধিতা করে দেশের সকল শিক্ষার্থীদের সাথে সহমত পোষণ করে রাজপথে থেকেছি। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে তাদের সাথে আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছি।তারা আমাকে তথাকথিত সমন্বয়ক বলতে পারেন না। তিনি আরো বলেন, টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় ভেকু দিয়ে গুড়িয়ে দেয়া এবং জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুর রহমান খান’সহ অন্যান্য নেতাদের বাড়িতে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের সিদ্ধান্ত সবাই মিলেই নেওয়া হয়েছিলো। তারা আমাকে তথাকথিত সমন্বয়ক হিসেবে চিহ্নিত করতে পারেন না। তাদের এ বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাই। তারা এ কাজে ভেকু ভাড়া করে সহায়তা করেছে তার প্রমাণ আমার কাছে আছে। টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের অফিস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগকালীন তারা উপস্থিত থেকে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগে সহায়তা করেছেন এবং আওয়ামী লীগ বিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে উৎসাহ যুগিয়েছেন। আওয়ামী লীগ অফিস ভাঙচুর শেষে তারা কৌশলে সটকে পরেন।
আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের বাড়িতে লুটপাট সম্পর্কে জানতে চাইলে গণমাধ্যমকে মারইয়াম মুকাদ্দাস মিষ্টি জানান, আওয়ামী লীগের নেতাদের বাড়ির প্রত্যকটি ইটে সাধারণ মানুষের হক আছে। তবে লুটপাটের বিষয়ে আমি জানি না।
উল্লেখ্য, গত ৬ ফেব্রয়ারী টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় ভেকু দিয়ে গুড়িয়ে দেয়া এবং জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুর রহমান খান, সাবেক মেয়র জামিলুর রহমান মিরন ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলাম ভিপি জোয়াহের এর বাড়িতে ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।