মালিক ও শ্রমিকরা চান, নির্বাচনের মাধ্যমে নেতা নির্বাচিত হোক। টাঙ্গাইলে পরিবহন চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে জেলা বাস কোচ মিনি বাস মালিক সমিতির বিরুদ্ধে। ১০০ টাকার আমানত কুপন ছাপিয়ে বছরে প্রায় দুই কোটি টাকা চাঁদা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। বছর শেষে এই টাকা মালিকদের ফেরত দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হয় না,এমন অভিযোগও করছেন তারা। আবার বছরে একদিন পিকনিকের নামে আনন্দ ভ্রমণ তহবিল কুপন ছাপিয়ে সারা বছর প্রতি বাস থেকে ৫০ টাকা করে চাঁদা তোলা হয়। এই তহবিলে বছরে আদায় হচ্ছে প্রায় কোটি টাকা। এই টাকা শ্রমিক কল্যাণ তহবিলসহ বিভিন্ন খাতে ভাগবাটোয়ারা হয়। গত বছর আনন্দ ভ্রমণের নামে বহিরাগতদের বিমানে করে কক্সবাজার নিয়ে যাওয়া হয়। এমন কী তাদেরকে পাঁচতারকা হোটেলে সিট দেয়া হয়। আর মালিকদেরকে লক্করজক্কর বাসে করে নেয়া হয়। তাদেরকে নিম্নমানের খাবার দেয়া হয়। এমন ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মালিকরা।
পরিবহণ মালিক ও শ্রমিকরা জানান, টাঙ্গাইলে যে যখন দাপটে থাকেন সেই সদস্যরা জেলা বাস মালিক সমিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। অবৈধ আয়ের সোনার খনি হিসেবে পরিচিত এই খাতের ওপর দৃষ্টি পড়েছে প্রায় সবার।
সাধারণ মালিকরা জানান, মহাসচিব পদ একটি রাজনৈতিক পদ। এ পদ সৃষ্টি হয়েছে লুটপাটরে জন্য। মহাসচিব পদ বিলুপ্তের জোড় দাবি জানান সাধারণ মালিকরা। তারা আরও জানান, পূর্বের ন্যায় দুই সমিতি পৃথক ভাবে থাকলে ব্যবসায় প্রতিযোগিতা হবে। চাঁদাবাজিও কমে যাবে। তারা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় মালিক সমিতির নেতৃত্ব দেখতে চান।
মালিক সমিতির একাধিক নেতা ও মালিকরা জানায়, টাঙ্গাইল জেলা বাস কোচ মিনিবাস মালিক সমিতিভুক্ত গাড়ির সংখ্যা প্রায় ৮’শ টির মতো। এর মধ্যে গড়ে প্রতিদিন অন্তত ৪৫০ বাস চলাচল করে। প্রতিদিন একটি বাস থেকে ৫০০ টাকা চাঁদা তোলা হয়। এ হিসাবে প্রতি মাসে চাঁদা ওঠে ৬৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। বছরে টাকার পরিমাণ দাঁড়ায় ৮ কোটি ১ লাখ টাকা। এই টাকা সমিতির পরিচালনা ব্যয়, মালিকের আমানত, আনন্দভ্রমণ তহবিল, কাউন্টার মাস্টার ও লাইনম্যানসহ বিভিন্ন খাতে ভাগবাটোয়ারা হয়।
টাঙ্গাইল পরিবহণ সমিতির উপজেলা পর্যায়ে শাখা অফিস দেওয়া হয়েছে। সেখানকার চাঁদার টাকার ভাগও আসে। এছাড়া এলেঙ্গা স্পটে উত্তরাঞ্চলে চলাচলকারী প্রতিটি গাড়ি থেকে ১০০-১৫০ টাকা করে চাঁদা তোলা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মালিক বলেন, চাঁদাবাজি করা তাদের মূলকাজ। মালিক সমিতির নেতারা মালিক কল্যাণে কোন কাজ করেনি।
টাঙ্গাইল জেলা বাস কোচ মিনি বাস মালিক সমিতির মহাসচিব গোলাম কিবরিয়া বড় মনি আত্মগোপনে চলে যাওয়ায় ও তার মুঠোফোন বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
টাঙ্গাইল জেলা বাস কোচ মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি খন্দকার ইকবাল হোসেন বলেন, আমানত ও আনন্দ ভ্রমণের কুপনের টাকা লুটপাটের ঘটনার বিষয়টি ঠিক নয়। এক বছর পর টাকা ফেরত দেওয়া হয়। কিন্তু গত বছর টাকা ফেরত দেওয়ার সময়ে পিকনিক হওয়ায় ওই খাতের টাকা পিকনিকে খরচ করা হয়েছে। বর্তমানে আমরা চাঁদা বন্ধ করে দিয়েছি। সব ফান্ডের টাকা একত্রিত করে মালিকদের নিজস্ব টাকা ফেরত দেয়া হবে। আগামী অক্টোবর ও নভেম্বর মাসের মধ্যে এই টাকা ফেরত দেয়া হবে। আমি চাই নির্বাচনের মাধ্যমে নেতা নির্বাচিত হোক।