টাঙ্গাইল জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির অবৈধ দখল, চাঁদাবাজি ও পরিবহণ সেক্টরকে দলীয়করণের অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদ ও নির্বাচনের দাবি জানিয়ে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবে ১০ অক্টোবর সংবাদ সম্মেলন করেছেন মালিক সমিতির সদস্যরা।
টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবে জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ মালিকদের আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সমিতির সাবেক ক্রীড়া ও সংস্কৃতিক সম্পাদক শফিকুর রহমান খান শফিক।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ২০১৩ সালে জেলা বাস মালিক সমিতি এবং জেলা লাক্সারি মিনিবাস মালিক সমিতি নামে দুটি পৃথক সমিতি শ্রম মন্ত্রণালয়ের রেজিস্ট্রেশন করে বৈধভাবে পরিচালিত হচ্ছিল। এরপর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দলীয় প্রভাব বিস্তার করে অবৈধভাবে দুটি সমিতি একত্র করে মহাসচিব নামে একটি পদ সৃষ্টি করে, শুধুমাত্র চাঁদাবাজি এবং লুটপাটের উদ্দেশ্যে দুটি সমিতিকে একত্রীকরণ করা হয়, যা অদ্যাবধি চলমান।
তিনি বলেন, সর্বশেষ ২০২২ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে পাতানো একটি সাধারণ সভা ডাকা হয়। সমিতির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, সাধারণ সভায় সব মালিকরা হাত তুলে সম্মতি দিলে অথবা নির্বাচনের পক্ষে তুলে সম্মতি দিলে সেটাই কার্যকর হওয়ার কথা। কিন্তু জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মালিকদের হাত তুলতে বললে কোনো মালিক হাত তুলে সম্মতি জ্ঞাপন করেনি। এরপরও সব নিয়মনীতি উপেক্ষা করে মালিক সমিতি তিন বছরের নামে অবৈধ কমিটি ঘোষণা করে, যা অদ্যাবধি বহাল আছে। বর্তমান মালিক সমিতি রেজিস্ট্রেশনবিহীনভাবে চলছে।
তিনি বলেন, মালিক সমিতির মহাসচিব দুটি ধর্ষণ মামলাসহ একাধিক হত্যা মামলার আসামি। বর্তমানে বিগত সরকারের অনুগতরা জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতি পরিচালনা করছেন। এ নিয়ে সাধারণ মালিকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
বিভিন্নভাবে তোলা টাকা থেকে সাধারণ মালিকরা একাশি লাখ টাকা পাওনা আছে বলে জানান। সমিতির শুরু থেকে কোনো মালিক মৃত্যুবরণ করলে তাকে এককালীন ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত দেওয়া হয়নি।
মালিকদের সন্তানদের শিক্ষাক্ষেত্রে দুই হাজার টাকা দেওয়ার কথা থাকলে সেটাও কাউকে দেওয়া হয়নি। এছাড়া নামে বেনামে ভুয়া বিল ভাউচার করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন টাঙ্গাইল জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম খান মিটন, সকাল সন্ধ্যা পরিবহনের মালিক জাদিদুর রহমান জাদিদ, অ্যাপোলো এন্টারপ্রাইজের চেয়ারম্যান নিলুফার ইয়াসমিন খান, শহিদুর রহমান, সাবেক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক আজিজুর রহমান, সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক রুমি ভূইঁয়া’সহ শতাধিক মালিকগন।
টাঙ্গাইল জেলা বাস, মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারন মালিকগন বলেন, সমিতির শুরু থেকেই কোন মালিক মৃত্যুবরন করলে তাকে একাকালীন ৫০,০০০/- দেওয়ার কথা কিন্তু সেই মরনোত্তর টাকা কোন মালিককে প্রদান করা হয়নি। সাধারন মালিকদের সন্তানদেরকে শিক্ষা ক্ষেত্রে উৎসাহিত করার জন্য প্রতি বছর জানুয়ারি মাসে ২০০০/- করে টাকা শিক্ষা বৃত্তি দেওয়ার কথা থাকলেও সে টাকাও দেওয়া হয়নি। কোন নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে দলীয় নেতাকর্মীদেরকে মাসোহারা ভিত্তিতে সমিতি থেকে প্রতি মাসে টাকা দেওয়া হয় এবং বিভিন্ন নামে বেনামে ভুয়া বিল ভাউচার করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়। নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করলে তার সঠিক প্রমান পাওয়া যাবে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে অবৈধ কমিটি এবং চাদাবাজ লুটপাট কারীদের বিরুদ্ধে সাধারন মালিকরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন।
সমিতির সাধারন মালিকগনের দাবি, চাঁদাবাজদের দিয়ে গঠিত অবৈধ কমিটি বাতিল করে, নিয়মতান্ত্রিকভাবে প্রকৃত পরিবহন মালিকদের দিয়ে সমিতি পরিচালনা করা হোক।