টাঙ্গাইল আদালত প্রাঙ্গণের মূল রাস্তা সহ পৌরএলাকার বিভিন্ন সড়ক চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। দিনের পর দিন রাস্তাগুলোর এই বেহাল অবস্থার কারণে নারী পুরুষ, বিশেষ করে স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রী ও বিভিন্ন পেশার কর্মজীবী মানুষ পড়ছে চরম ভোগান্তিতে। পৌর কর্তৃপক্ষ বারবার আশ্বাস দিলেও বাস্তবে এর কার্যকরী কোন পদক্ষেপ চোখে পড়ছে না।
ইতিপূর্বে জেলা প্রশাসকের বিভিন্ন সভায় যানজট ও রাস্তাঘাটের বেহাল দশা নিয়ে আলোচনা হলেও কার্যকরী কোন ফলাফল এখন পর্যন্ত দেখা যায়নি। বেশিরভাগ রাস্তায় একটু বৃষ্টি হলেই রিকশা, মোটরসাইকেল কিংবা অ্যাম্বুলেন্স চলাচল অসম্ভব হয়ে পড়ে। অনেক সময় যানবাহন উল্টে দুর্ঘটনা ঘটে। টাঙ্গাইল জেলা শহরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর গুলোতে যাতায়াতের যে রাস্তা গুলো রয়েছে সেগুলোর অবস্থা খুবই খারাপ। বিশেষ করে ডিসি অফিস, এসপি অফিস,জেলা পরিষদ ও আদালত সংলগ্ন যে রাস্তা রয়েছে, সে রাস্তাগুলোতে ছোট বড় বেশ কিছু গর্ত তৈরি হয়েছে, ঢালাই দেয়া রাস্তা গুলোতে লোহার রোড গুলো বেরিয়ে ররেছে। এ কারণে মাঝে মাঝেই দুর্ঘটনা ঘটে। এগুলোতে মাঝে মাঝে বৃষ্টির পানি জমে হাঁটা চলার পথও বন্ধ হয়ে যায়।
পৌরসভার জেলা সদর হয়ে এলজিইডি মোড়ের রাস্তা, পার্কবাজার, কলেজপাড়া, থানাপাড়া, আদালতপাড়া, স্টেডিয়াম ব্রিজ সংলগ্ন এলাকা ও কাগমাড়াসহ শহরের একাধিক রাস্তা খানাখন্দে পরিনত হয়েছে। ওই রাস্তাগুলো দিয়ে রিকসা, অটোরিকসা ও যানবাহনগুলো যাত্রী নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে চলাচল করছে। এ বিষয়ে কথা হয় কয়েকজন ভুক্তভোগীর সাথে, রিকসা চালক আলম মিয়া ও পলাশ ক্ষোভ নিয়ে বলেন এই রাস্তাগুলো দীর্ঘদিন ধরে চলাচলের উপযোগী না থাকলেও কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এমন ভাঙা রাস্তা দিয়ে যাত্রী নিয়ে চলাফেরা খুবই কষ্টকর। এছাড়া চলাচলের সময় একটু এদিক সেদিক হলেই রিকসা উল্টে যায়, নয়তো রিকসার যাত্রী পড়ে যায়। তারা বলেন গত সপ্তাহে এক স্কুল ছাত্রী রিকসা থেকে পড়ে গিয়ে হাত ভেঙে যায়। পরে স্থানীয়রা রিকসা চালককে মারধর করে। সিএনজি চালক নুরু মিয়া বলেন, পৌর এলাকার প্রায় রাস্তাগুলোর করুণ দশা। এমন রাস্তা দিয়ে গাড়ী চালালে গাড়ীর ব্যাপক ক্ষতি হয়। এছাড়াও রোগী নিয়ে যাতায়াত করা খুবই কঠিন।
পার্কবাজারের পথচারীরা জানান, এই রাস্তাটি পৌরসভার খুবই গুরত্বপুর্ন রাস্তা, হাজার-হাজার লোক ও শত-শত ব্যাবসায়ীর চলাফেরা এই রাস্তাটি দিয়ে। পৌরসভার উদাসীনতার কারণে সাধারণ মানুষকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। কাঁচামালের ব্যবসায়ী সাত্তার মিয়া বলেন, দুরদুরান্ত থেকে তিনি কাঁচামাল কিনে পার্কবাজারে এনে বিক্রি করেন। এখানকার রাস্তাঘাট খারাপ থাকায় ভ্যান রিকসা আসতে চায়না। আসলেও ভাড়া বেশি নেয়। টাঙ্গাইল কোর্টের কয়েকজন আইনজীবী বলেন, আদালত প্রাঙ্গনের রাস্তাটির অবস্থা খুব খারাপ। বর্তমানে রাস্তাটির সলিং উঠে গিয়ে রড বেড় হয়ে গেছে। সেই রডের কারনে মাঝেমধ্যেই এখানে দুর্ঘটনা ঘটে।
জেলা সদর রোডে এরকম ভুক্তভোগী বাবু মিয়াবলেন, জেলা সদরের এই রাস্তাটি দিয়ে হাজার হাজার লোকজনের চলাফেরা। এছাড়াও জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোকজন কোর্টে আসতে এই রাস্তাটি ব্যবহার করে। দীর্ঘদিন যাবত এই রাস্তাটি খানাখন্দে পরিণত হওয়ায় সাধারণ মানুষের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। তিনি বলেন, মাঝে মধ্যে পৌরসভা থেকে রাস্তায় রাবিশ ফেললেও সামান্য বৃষ্টিতে তা ধুঁয়ে যায়। তিনি টাঙ্গাইল পৌর কৃর্তপক্ষের নিকট রাস্তাটির দ্রুত সংস্কার করার দাবি জানান।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইল পৌরসভার প্রশাসক ও স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক শিহাব রায়হান এর সাথে একাধিকবার কথা হয়েছে। তিনি বলেন, রাস্তাগুলোর বিষয়ে তিনি অবগত আছেন। পর্যায়ক্রমে রাস্তাগুলো মেরামত করা হবে।